দল না করলে মিলছে না ত্রাণ, বঞ্চিত হতদরিদ্র মানুষ গুলো ||



ভিডিওটি দেখুন...



দল না করলে মিলছে না ত্রাণ, বঞ্চিত হতদরিদ্র মানুষ গুলো ||



এলাকায় যারা ক্ষমতাশীল নেতা তারা মুখ চিনে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। আমারা যারা রিকশা ও অটো চালাই আজ পর্যন্ত কোনো ত্রাণ বা সরকারি সহযোগিতা পাই নাই। চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ ক্ষমতাশীল অনেক নেতার কাছে গেছি। তারা আমাদের ধমক দিয়ে তাড়ায়ে দিছে। তারা বলেছেন যারা মিটিং-মিছিল করে তাদেরকেই শুধু ত্রাণ দেবেন।

করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের হতদরিদ্ররা শনিবার (১৮ এপ্রিল) পর্যন্ত কোনো খাদ্য সহযোগিতা না পাওয়ায় এসব কথা বলেন।

তারা অভিযোগ করে বলেন, একজনের ৬০ বিঘা জমি আছে, সে মাথায় করে সরকারি ত্রাণ নিয়ে যায়। সে দলীয় লোক। আর আমরা রিকশা-ভ্যান, অটোচালক, চায়ের দোকানদার যারা আছি তারা আজ পর্যন্ত চারআনার কোনো ত্রাণ পাই নাই। তাহলে আমরা কি এদেশে ভাইসা আইছি নাকি? আমাদের এই করুণ অবস্থায় সরকার যদি পাশে না থাকে তাহলে আমরাতো করোনাভাইরাসের আগে না খেয়ে মারা যাবো।

ত্রাণ বঞ্চিতদের অভিযোগ, দলীয়করণের মাধ্যমে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও স্বচ্ছল পরিবারগুলো ত্রাণ পাচ্ছে। কিন্তু অসহায় দরিদ্ররা পাচ্ছে না। এছাড়াও চেয়ারম্যান-মেম্বাররাও কোনো সহযোগিতা করছে না।

অসহায় এক বৃদ্ধা বলেন, ‘আমরা খুব গরিব মানুষ, সবাই সবারি হগলতা দেয়। আমাগেরে দেয় না, মুখ বাইছে বাইছে হগলতা দেয়। এহন আমাগের বাড়ি বইসে না খায়াও দিন যায়তেছে। আমার স্বামী রিকশা চালায়, এহন রিকশাডা পর্যন্ত চালাবের পারতেছে না। মানুষ জন নাই, টাহা পয়সা কেবা করে অবি।

এলাকাবাসী জানায়, চালের কার্ড এক বাড়িতে কয়েকটা, কিন্তু যারা গরিব তারা এক কেজি চালও পায় না। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি নুরু এই কাজ করেন। বর্তমানে দোকান পাট, কাজকর্ম বন্ধ রেখে সবাই মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ এলাকার ঘরবন্দি অসহায় মানুষগুলো কোনো সহযোগিতা পায়নি। যারা বড়লোক ও যাদের মাঠে অনেক জমি জমি আছে তারা চাল পায়। কিন্তু যারা রিকশা-ভ্যান চালায়, দিনমজুর তারা পায় না। দল না করায় ত্রাণ পাচ্ছে না। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন ত্রাণ পাচ্ছে।



পাঁচুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর জানান, তিনি মাত্র সাড়ে ৩ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। এত কম বরাদ্দ পেয়ে কিভাবে জনগণের চাহিদা মেটাবেন। তার ইউনিয়নে প্রায় ২৫ হাজার জনগণ। এর মধ্যে প্রায় ৮ হাজার অসহায় ও দরিদ্র। যে বরাদ্দ পেয়েছেন তা সাড়ে ৩শ মানুষের মাঝে বিতরণ করেছেন। এর মধ্যে ৫০ জন চায়ের দোকানদার, ১০০ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও ২০০ জন অসহায় ও হতদরিদ্র। তারপরও নতুন করে ২ হাজার হতদরিদ্রের একটি তালিকা করে উপজেলায় জমা দিয়েছেন। কিন্তু নতুন করে বরাদ্দ পাননি। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশ্বস্ত করেছেন পর্যায়ক্রমে বরাদ্দ দেবেন এবং সবাই ত্রাণের আওতায় আসবে।

Comments